মানবদেহের রেচনতন্ত্র সম্পর্কে কিছু এমসিকিউ

১. অতিরিক্ত পানি, খনিজ লবণ(বিশেষ করে সোডিয়াম ক্লোরাইড) ও সামান্য পরিমাণ ইউরিয়া নিষ্কাশন করে -

ক. ত্বকের ঘাম গ্রন্থি খ. ত্বকের সিবেসাস গ্রন্থি

গ. ফুসফুস                 ঘ. যকৃত

উত্তর ঃ ক। ত্বকের সিবেসাস গ্রন্থি : অল্প পরিমাণ কোলেস্টেরল, ফ্যাটি অ্যাসিড, হাইড্রোকার্বন প্রভৃতি। ফুসফুস : কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয় বাষ্প।

যকৃত : পিত্তরঞ্জক। অন্ত্র ঃ কিছু পরিমাণ লৌহ ও ক্যালসিয়ামঘটিত লবণ।

এগুলো বর্জ্য পদার্থ ঠিকই কিন্তু প্রধানত নাইট্রোজেনজাত নয়, তাই এগুলো রেচন পদার্থও নয়। নাইট্রোজেনজাত বর্জ্য পদার্থই হচ্ছে রেচন পদার্থ।

২. রেচনতন্ত্রের মাধ্যমে শতকরা কত ভাগ রেচন পদার্থ নিষ্কাশিত হয়?

ক. ৬০ খ.৭০ গ.৮০ ঘ. ৯০

উত্তর ঃ গ। বাকি ২০ ভাগ রেচন পদার্থ বিভিন্ন ক্রিয়াকর্মে উৎপন্ন ও বিভিন্ন অঙ্গের মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়। এসব অঙ্গ সহকারী রেচন অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।

৩. রেচন অঙ্গ বলতে কোনটিকে বোঝায়?

ক. বৃক্ক খ. ইউরেটার

গ. মূত্রনালী ঘ. মূত্রথলি

উত্তর ঃ ক। তাই রেচন অঙ্গ বলতে বৃক্ককে বোঝায় এবং রেচনতন্ত্র বলতে বৃক্ক, ইউরেটার, মূত্রনালী ও মূত্রথলিকে সম্মিলিতভাবে বোঝায়।

৪. নিম্নের কোন তথ্যটি ভুল?

ক. সাধারণত ডান বৃক্কটি বাম বৃক্কের চেয়ে সামান্য উপরে থাকে।

খ. একটি পরিণত বৃক্কের দৈর্ঘ্য ১০-১২ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৫- ৬ সেন্টিমিটার এবং স্থূলত্ব ৩ সেন্টিমিটার।

গ. প্রত্যেকটি বৃক্কের ওজন পুরুষে ১৫০- ১৭০ গ্রাম এবং স্ত্রীলোকে ১৩০-১৫০ গ্রাম।

ঘ. বৃক্কের বাইরের দিক উত্তল ও ভেতরের দিক অবতল।

উত্তর ঃ ক। প্রতিটি বৃক্ক নিরেট, চাপা দেখতে অনেকটা শিম বীজের মতো এবং লালচে রংয়ের।

৫. বৃক্কের অবতল অংশের ভাঁজকে কি বলে?

ক. মেডুলা খ. ইউরেটার

গ. ক্যাপস্যূল ঘ. হাইলাম

উত্তর ঃ ঘ। অবতল অংশের ভাঁজকে হাইলাম বলে। এর ভেতর দিয়ে ইউরেটার ও রেনাল শিরা বহির্গত হয় এবং রেনাল ধমনী ও স্নায়ু বৃক্কে প্রবেশ করে। সমগ্র বৃক্ক ক্যাপস্যূল নামক সন্তুময় যোজক কলার সুদৃঢ় আবরণে বেষ্টিত। 

৬. বৃক্কের একটি লম্বচ্ছেদ খালি চোখে দেখলে .............. টি সুস্পষ্ট অঞ্চল দেখা যায়।

ক. ২ খ. ৩ গ. ৪         ঘ. ৫

উত্তর ঃ ক। ক্যাপসুল সংলগ্ন কর্টেক্স এবং অন্তঃস্থ মেডুলা।

৭. কর্টেক্সে নেফ্রনের কোন অংশটি অবস্থান করে না?

ক. রেনাল বা মালপিজিয়ান কণিকা খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা                 ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ ঘ। নেফ্রনের লুপ অব হেনলি, সংগ্রাহী নালিকা ও রক্তবাহিকাগুলো মেডুলা অংশে অবস্থিত এবং এসব অংশ সম্মিলিতভাবে কতকগুলো রেনাল পিরামিড গঠন করে। প্রত্যেক পিরামিডের চূড়াকে প্যাপিলা বলে। সমস্ত পিরামিড পেলভিস এ উদগত হয় (পেলভিস হচ্ছে ইউরেটারের উৎপত্তিস্থল যা দেখতে ফানেলের মতো চওড়া।

৮. এই কাজটি বৃক্কের নয়-

ক. রক্তে অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করা।

খ. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা।

গ. হরমোন ও এনজাইম ক্ষরণ করা।

ঘ. ভিাটামিন ডি ও লোহিত কণিকা তৈরিতে অংশ নেয়া।

উত্তর ঃ গ। 

বৃক্কের কাজ ঃ রক্ত থেকে নাইট্রোজেন জাতীয় বর্জ্য অপসারণ করা। দেহে পানির ভারসাম্য রক্ষা করা। দেহে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড ইত্যাদির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা।

৯. প্রত্যেক বৃক্কের ভেতর থেকে ইউরেটার নামে একটি ..................... সেন্টিমিটার লম্বা নালী বেরিয়ে তির্যকভাবে মূত্রথলির পেছনদিকে প্রবেশ করে।

ক. ৫ - ১০ খ. ১০ - ১৫

গ. ২৫- ৩০ ঘ. ৩০ - ৩৫

উত্তর ঃ গ।

১০. ইউরেটারের উৎপত্তিস্থল ফানেলের মতো চওড়া, একে বলে -

ক. মেডুলা খ. পেলভিস

গ. ক্যাপস্যূল ঘ. হাইলাম

উত্তর ঃ খ।

১১. মূত্রকে বৃক্ক থেকে মূত্রথলিতে বহন করেÑ

ক. মেডুলা খ. ইউরেটার

গ. মূত্রনালী ঘ. মূত্রথলি

উত্তর ঃ খ।

১২. মূত্রথলির ধারণ ক্ষমতা প্রায় ................ মিলিমিটার।

ক. ৫৫০ খ. ৬০০

গ. ৩০০ ঘ. ৪৫০

উত্তর ঃ ঘ।

১৩. মূত্রথলি থেকে বাইরে মূত্র নিষ্কাশন করে-

ক. মেডুলা খ. ইউরেটার

গ. মূত্রনালী ঘ. মূত্রথলি

উত্তর ঃ গ। পুরুষে এটি ১৮ - ২০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং শিশ্নের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে অগ্রভাগের এক ছিদ্রপথে বাইরে উন্মুক্ত হয়। স্ত্রীলোকে এটি লম্বায় ৩.৫ - ৪ সেন্টিমিটার এবং আলাদাভাবে দেহের বাইরে উন্মুক্ত হয়। পুরুষের ক্ষেত্রে এ পথে বীর্যও স্খলিত হয়।

১৪. মানুষের প্রত্যেক বৃক্কে ১০ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ নেফ্রন রয়েছে।

ক. ৫ - ১০ খ. ১০ - ১২

গ. ২৫- ৩০ ঘ. ৩০ - ৩৫

উত্তর ঃ খ। বৃক্কের গাঠনিক ও কার্যিক একককে নেফ্রন বলে। প্রতিটি নেফ্রন প্রায় ৩ সেমি. লম্বা।

১৫. প্রতি মিনিটে কত ঘন সেমি. মূত্র সৃষ্টি হয়?

ক. ১ খ. ১০

গ. ১২৫ ঘ. ১৩০

উত্তর ঃ খ। বৃক্কের মাধ্যমে প্রতি মিনিটে রক্ত থেকে ১২৫ ঘন সেমি. তরল পদার্থ পরিশ্র“ত হয়। প্রায় ৯৯% পানিই আবার রক্তে ফিরে যায়, সাধারণত প্রতি মিনিটে কেবল ১ ঘন সেমি. মূত্র সৃষ্টি হয়।

১৬. প্রত্যেক নেফ্রন ২ টি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত ঃ (ক) রেনাল করপাসল এবং (খ) 

ক. রেনাল বা মালপিজিয়ান কণিকা          খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা                         ঘ. রেনাল টিউব্যুল।

উত্তর ঃ ঘ।

১৭. রেনাল করপাসল বৃক্কের কর্টেক্সে অবস্থিত এবং রেনাল ক্যাপস্যুল বা বোম্যানস ক্যাপসুল ও নিয়ে গঠিত।

ক. রেনাল বা মালপিজিয়ান কণিকা     খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. গ্লোমেরুলাস                     ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ ঘ। 

১৮. একটি গ্লোমেরুলাসে প্রায় কতটি কৈশিকজালিকা থাকে?

ক. ৫০ খ. ৬০ গ. ৭০ ঘ. ৮০

উত্তর ঃ ক।রেনাল ক্যাপস্যুলে প্রায় সম্পূর্ণ আবদ্ধ এবং রেনাল অ্যাফারেন্ট (অন্তর্গামী) আর্টারিওল থেকে সৃষ্ট একগুচ্ছ কৈশিকজালিকাকে গ্লোমেরুলাস বলে।

১৯. দুই বৃক্কের প্রায় ............... লক্ষ রেনাল টিউব্যুল থাকে।

ক. ১৪ খ. ২৪

গ. ৩০ ঘ. ৩৫

উত্তর ঃ খ। দুই বৃক্কের মোট প্রায় ২৪ লক্ষ রেনাল টিউব্যুল এর সম্মিলিত দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৭২  কিলোমিটার।

২০. কোনটি রেনাল টিউব্যুল এর অংশ নয়?

ক. রেনাল বা মালপিজিয়ান কণিকা খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা                 ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ ক। প্রতিটি রেনাল টিউব্যুল ৪টি অংশে বিভক্ত। অপর অংশটির নাম সংগ্রাহী নালী।

২১. এটি নেফ্রনের প্রথম এবং দীর্ঘতম ও প্রশস্ততম অংশÑ

ক. সংগ্রাহী নালী খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ ক।

২২. এটি সুস্পষ্ট ৩টি অংশে বিভক্ত, যথা- আঁইশাকার কোষে নির্মিত পাতলা প্রাচীরবিশিষ্ট নিম্নগামী বাহু; আঁইশাকার কোষে নির্মিত পাতলা প্রাচীরবিশিষ্ট এবং ঊর্দ্ধগামী বাহুর নিম্ন অর্ধাংশ গঠনকারী পাতলা ঊর্দ্ধগামী বাহু; এবং ঘনতলীয় কোষে নির্মিত স্থূল প্রাচীরবিশিষ্ট এবং ঊর্দ্ধগামী বাহুর উপরের অর্ধাংশ গঠনকারী স্থূল ঊর্দ্ধগামী বাহু।

ক. সংগ্রাহী নালী খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ ঘ।

২৩. এখানে উভয়ের কোষগুলো নিবিড় ও ক্ষরণকারী কোষে পরিবর্তিত হয়ে জাক্সটাগ্লোমেরুলার কমপ্লেক্স গঠন করে। 

ক. সংগ্রাহী নালী খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ গ।

২৪. এটি ডিস্টাল প্যাঁচানো নালীর পরবর্তী এবং নেফ্রনের সর্বশেষ অংশ।

ক. সংগ্রাহী নালী খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ ক। কয়েকটি সংগ্রাহী নালী মেডুলার গভীরে পরস্পর একীভূত হয়ে স্তম্ভাকার কোষ নির্মিত বেলিনির নালী গঠন করে। প্রতিটি বেলিনির নালী রেনাল পিরামিডে প্যাপিলার ছিদ্রপথে পেলভিসে উন্মুক্ত হয়।

২৫. মানবদেহের প্রধান নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থÑ

ক. ইউরিয়া         খ. ইউরিক এসিড 

গ. অ্যামোনিয়া ঘ. ক্রিয়েটিনিন

উত্তর ঃ ক। এটি প্রধানত যকৃতে (সামান্য পরিমাণে মস্তিষ্কে ও বৃক্কে) ডিঅ্যামাইনেজ এনজাইমের সহায়তায় অ্যামিনো অ্যাসিডের ডিঅ্যামিনেশন প্রক্রিয়ায় অরনিথিন চক্রের মাধ্যমে উৎপন্ন হয় এবং রক্ত-সংবহনের মাধ্যমে বৃক্কে পৌঁছায়।


২৬. মানবদেহে পিউরিন বিপাকের শেষ পরিণতি হচ্ছে ................ উৎপাদন।

ক. ইউরিয়া         খ. ইউরিক এসিড 

গ. অ্যামোনিয়া ঘ. ক্রিয়েটিনিন

উত্তর ঃ খ। দেহজাত ও গৃহীত খাদ্য -এ দুধরনের পিউরিন জাতীয় পদার্থ থেকেই ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়ে বৃক্কে পৌঁছায়।

২৭. কলা-প্রোটিনের ভাঙনের মধ্য দিয়ে এ জটিল নাইট্রোজেনঘটিত পদার্থের উৎপত্তি হয়।

ক. ইউরিয়া         খ. ইউরিক এসিড 

গ. অ্যামোনিয়া ঘ. ক্রিয়েটিনিন

উত্তর ঃ ঘ।

২৮. মূত্র সৃষ্টি হয় কোথা থেকে?

ক. রক্তরস         খ. রক্তকণিকা

গ. লসিকা ঘ. কোনটিই নয়

উত্তর ঃ ক।

২৯. বিজ্ঞানী কুশনী -র মতে, কতটি ধাপে মানুষে মূত্র সৃষ্টি হয় ?

ক. ২ খ. ৩ গ. ৪             ঘ. ৫

উত্তর ঃ খ।(১) আলট্রাফিলট্রেশন/ অতিপরিস্রাবণ; (২) নির্বাচন-মূলক পুনঃশোষণ; এবং (৩) সক্রিয় ক্ষরণ।

৩০. বৃক্কের এই অংশটি অতিপরিস্রাবকরূপে কাজ করেÑ

ক. রেনাল ক্যাপস্যুল খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ ক।গ্লোমেরুলাস রক্তের হাইড্রোস্ট্যাটিক চাপে রক্তের প্রোটিন ও রক্তকণিকা ছাড়া সমস্ত পানি, লবণ, শর্করা, ইউরিয়া, ইউরিক অ্যাসিড প্রভৃতি পরিস্রাবণ প্রক্রিয়ায় কৈশিকজালিকার এন্ডোথেলিয়াম ও ভিত্তি ঝিল্লি এবং রেনাল ক্যাপস্যুলের এপিথেলিয়াম ভেদ করে ক্যাপস্যুলার স্পেসে জমা হয়। এ পরিস্রুত তরলকে গ্লোমেরুলার ফিলট্রেট বলে। যে চাপের মাধ্যমে রক্তের দ্রাব্যবস্তু পরিস্রুত হয়, তাকে কার্যকরী পরিস্রাবণ চাপ বলে।

৩১. ..................... নালিকার কোষেই অধিকাংশ পুনঃশোষণ সংঘটিত হয়। 

ক. রেনাল ক্যাপস্যুল খ. প্রক্সিমাল নালিকা 

গ. ডিস্টাল নালিকা ঘ. লুপ অব হেনলি

উত্তর ঃ খ। ৮০% পুনঃশোষিত হয় প্রক্সিমাল প্যাঁচানো নালিকায়। বাকি ২০% লুপ অব হেনলি, ডিস্টাল প্যাঁচানো নালিকা ও সংগ্রাহী নালীতে শোষিত হয়।