অ্যান্টিজেন ।। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উদ্দীপক


অ্যান্টিজেন হলো এমন পদার্থ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উদ্দীপিত করতে সক্ষম। বিশেষ করে এরা লিম্ফোসাইটকে সক্রিয় করে। লিম্ফোসাইট হলো শরীরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইকারী শ্বেত রক্তকণিকা। সাধারণভাবে, অ্যান্টিজেনের দুটি প্রধান বিভাগ স্বীকৃত: হেটেরোঅ্যান্টিজেন (বা বাহ্যিকঅ্যান্টিজেন) এবং অটোঅ্যান্টিজেন (বা স্ব-অ্যান্টিজেন)। বাহ্যিকঅ্যান্টিজেন শরীরের বাইরে থেকে উদ্ভূত হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ভাইরাস বা অণুজীব (যেমন ব্যাকটেরিয়া এবং প্রোটোজোয়া) দ্বারা উৎপাদিত কিছু অংশ বা পদার্থ, সেইসাথে সাপের বিষের পদার্থ, খাবারে কিছু প্রোটিন এবং অন্যান্য ব্যক্তির সিরাম এবং লোহিত রক্তকণিকার উপাদান। অন্যদিকে, অটোঅ্যান্টিজেনগুলি শরীরের মধ্যেই উৎপন্ন হয়। সাধারণত আমাদের শরীর নিজস্ব উপাদান এবং বিজাতীয় উপাদান আলাদা করতে সক্ষম। কিন্তু অটোইমিউন ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক শারীরিক পদার্থগুলি একটি ইমিউন প্রতিক্রিয়াকে উস্কে দেয়, ফলে শরীরে অটোঅ্যান্টিবডি তৈরি হয়। একটি অ্যান্টিজেন যা একটি ইমিউন প্রতিক্রিয়কে প্ররোচিত করে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে বা অ্যান্টিজেনকে সরাসরি আক্রমণ করতে লিম্ফোসাইটকে উদ্দীপিত করে তাকে ইমিউনোজেন বলে।

অ্যান্টিজেনের পৃষ্ঠে এমন অঞ্চল রয়েছে, যাকে অ্যান্টিজেনিক নির্ধারক বলা হয়, যেগুলি লিম্ফোসাইটের পৃষ্ঠের পরিপূরক কাঠামোর রিসেপ্টর অণুর সাথে মানানসই এবং আবদ্ধ হয়। অ্যান্টিজেনগুলির পৃষ্ঠের অণুর সাথে লিম্ফোসাইটের রিসেপ্টরগুলির আবদ্ধতা লিম্ফোসাইটগুলিকে বৃদ্ধি করতে এবং একটি ইমিউন প্রতিক্রিয়া শুরু করতে উদ্দীপিত করে। যেমন- অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি উৎপাদন, সাইটোটক্সিক কোষগুলির সক্রিয়করণ বা উভয়ই। উদ্দীপনার প্রতিক্রিয়ায় গঠিত অ্যান্টিবডির পরিমাণ নির্ভর করে অ্যান্টিজেনের ধরণ এবং পরিমাণ, শরীরে প্রবেশের পথ এবং হোস্টের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের উপর।