নিম্নশ্রেণির জীব সম্পর্কে ছোট ছোট কিছু প্রশ্ন

 প্রশ্ন: নিম্নশ্রেণির জীব কারা?

উত্তর: ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, শৈবাল, অ্যামিবা ইত্যাদি নিম্নশ্রেণির জীব।

প্রশ্ন: অণুজীব কাকে বলে?

উত্তর: আমরা আমাদের চারপাশে অনেক জীব দেখতে পাই। এসব জীব ছাড়াও আমাদের পরিবেশে অনেক জীব রয়েছে যাদের খালি চোখে দেখাই যায় না। এদের নির্দিষ্ট কেন্দ্রিকাযুক্ত সুগঠিত কোষও নেই। এরা অণুজীব নামে পরিচিত।

প্রশ্ন: অণুজীবদেরকে আদিজীব বলা হয় কেন?

উত্তর: অণুজীব থেকেই সৃষ্টির শুরুতে জীবনের সূত্রপাত হয়েছে। তাই অণুজীবদেরকে আদিজীবও বলা হয়ে থাকে।

প্রশ্ন: মারগুলিস ও হুইটেকারের জীবজগতের পঞ্চরাজ্য প্রস্তাবনায় অণুজীবসমূহকে কোন কোন রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে?

উত্তর: মনেরা, প্রোটিস্টা ও ফানজাই রাজ্যে।

প্রশ্ন: অণুজীবসমূহের শ্রেণিবিভাগ করতে গিয়ে বর্তমান কালে অণুজীব বিজ্ঞাণীগণ অণুজীব জগৎকে কতটি রাজ্যে ভাগ করেছেন?

উত্তর: তিনটি রাজ্যে।

প্রশ্ন: অণুজীব বিজ্ঞানীগণ অণুজীব জগৎকে যে তিনটি রাজ্যে ভাগ করেছেন সেগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

উত্তর: অণুজীব বিজ্ঞানীগণ অণুজীব জগৎকে যে তিনটি রাজ্যে ভাগ করেছেন সেগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিম্নে দেয়া হলো:

রাজ্য- ১ : এক্যারিওটা বা অকোষীয় : এসব অণুজীব এতই ছোট যে তা সাধারণ আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচেও দেখা যায় না। এদের দেখতে ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন হয়, যেমন- ভাইরাস।

 

রাজ্য- ২ : প্রোক্যারিওটা বা আদিকোষী : যেসব অণুজীবের কোষের কেন্দ্রিকা সুগঠিত নয় তারাই এ রাজ্যের সদস্য। সুগঠিত কেন্দ্রিকা না থাকায় এদের কোষকে আদিকোষ বলা হয়, যথা- ব্যাকটেরিয়া।

রাজ্য- ৩ : ইউক্যারিওটা বা প্রকৃতকোষী : যেসব অণুজীব কোষের কেন্দ্রিকা সুগঠিত তাদেরই প্রকৃত কোষ বলে। শৈবাল, ছত্রাক ও প্রোটোজোয়া এ ধরনের অণুজীব।

প্রশ্ন: কোন্ যন্ত্র ছাড়া ভাইরাসদেরকে দেখা যায় না?

উত্তর: ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া ভাইরাসদেরকে দেখা যায় না। এরা সরলতম জীব।

প্রশ্ন: ভাইরাস দেহকে অকোষীয় বলা হয় কেন?

উত্তর: ভাইরাসের দেহে কোষপ্রাচীর, প্লাজমালেমা, সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস, সাইটোপ্লাজম ইত্যাদি কিছুই নেই। তাই ভাইরাস দেহকে অকোষীয় বলা হয়।

প্রশ্ন: ভাইরাসের দেহ কী নিয়ে গঠিত?

উত্তর: ভাইরাসের দেহ শুধুমাত্র আমিষ আবরণ ও নিউক্লিক এসিড (ডিএনএ বা আরএনএ) নিয়ে গঠিত।

প্রশ্ন: ভাইরাসকে প্রকৃত পরজীবি বলা হয় কেন?

উত্তর: ভাইরাসের আমিষ আবরণ থেকে নিউক্লিক এসিড বের হয়ে গেলে এরা জীবনের সকল লক্ষণ হারিয়ে ফেলে। তবে অন্য জীবদেহে যেইমাত্র আমিষ আবরণ ও নিউক্লিক এসিডকে একত্র করা হয়, তখনি এরা জীবনের সব লক্ষণ ফিরে পায়। অর্থাৎ জীবিত জীবদেহ ছাড়া বা জীবদেহের বাইরে এরা জীবনের লক্ষণ দেখায় না। এ কারণে ভাইরাস প্রকৃত পরজীবি।

প্রশ্ন: ভাইরাসের আকৃতি কেমন?

উত্তর: ভাইরাস গোলাকার, দণ্ডাকার, ব্যাঙাচির ন্যায় ও পাউরুটির ন্যায় হতে পারে।

প্রশ্ন: ভাইরাস মানবদেহে কোন কোন রোগ সৃষ্টি করে?

উত্তর: ভাইরাস মানবদেহে বসন্ত, হাম, সর্দি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি রোগ সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন: ধানের টুংরো ও তামাকের মোজায়েক রোগ কোন অণুজীবের কারণে হয়? উত্তর: ভাইরাস।

প্রশ্ন: বায়ুবাহিত রোগ কোনগুলো?

উত্তর: বসন্ত, হাম, সর্দি ইত্যাদি বায়ুবাহিত রোগ।

প্রশ্ন: ব্যাকটেরিয়া কী?

উত্তর: ব্যাকটেরিয়া হলো আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত, অসবুজ, এককোষী আণুবীক্ষণিক জীব।

প্রশ্ন: কে সর্বপ্রথম ব্যাকটেরিয়া দেখতে পান?

উত্তর: বিজ্ঞানী অ্যান্টনি ফন লিউয়েন হুক সর্ব প্রথম ব্যাকটেরিয়া দেখতে পান।

প্রশ্ন: ব্যাকটেরিয়া কোষের আকৃতি কেমন হতে পারে?

উত্তর: ব্যাকটেরিয়া কোষ গোলাকার, দণ্ডাকার, কমা আকার, প্যাঁচানো ইত্যাদি নানা ধরণের হতে পারে।

প্রশ্ন: দেহের আকার আকৃতির ভিত্তিতে ব্যাকটেরিয়াকে কীভাবে শ্রেণিবদ্ধ করা যায়?

উত্তর: দেহের আকার আকৃতির ভিত্তিতে ব্যাকটেরিয়াকে নিম্নরূপে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়:

ক) কক্কাস: কোনো কোনো ব্যাকটেরিয়া কোষের আকৃতি গোলাকার। এরা কক্কাস ব্যাকটেরিয়া। এরা এককভাবে অথবা দলবেঁধে থাকতে পারে, যেমন- নিউমোনিয়া রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া।

খ) ব্যাসিলাস: এরা দেখতে লম্বা দণ্ডের ন্যায়। ধনুষ্টংকার, রক্তামাশয় ইত্যাদি রোগ এরা সৃষ্টি করে।

গ) কমা: এরা বাঁকা দণ্ডের ন্যায় আকৃতির ব্যাকটেরিয়া। মানুষের কলেরা রোগের ব্যাকটেরিয়া এ ধরনের।

ঘ) স্পাইরিলাম: এ ধরণের ব্যাকটেরিয়ার আকৃতি প্যাঁচানো।

প্রশ্ন: গোলাকর আকৃতির ব্যাকটেরিয়াকে কী বলে?

উত্তর: কক্কাস।

প্রশ্ন: নিউমোনিয়া রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কেমন ধরনের?  উত্তর: কক্কাস।

প্রশ্ন: ব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া দেখতে কেমন?

উত্তর: লম্বা দণ্ডের ন্যায়।

প্রশ্ন: ব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে কী রোগ সৃষ্টি করে?

উত্তর: ধনুষ্টংকার, রক্তামাশয় প্রভৃতি রোগ।

প্রশ্ন: বাঁকা দণ্ডের ন্যায় আকৃতির ব্যাকটেরিয়াকে কী বলে?

উত্তর: কমা।

প্রশ্ন: কমা ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে কী রোগ সৃষ্টি করে?  উত্তর: কলেরা।

প্রশ্ন: ব্যাকটেরিয়া আমাদের কী উপকার করে?

উত্তর: ব্যাকটেরিয়া আমাদের নিম্নরূপে উপকার করে:

-         মৃত জীবদেহ ও আবর্জনা পঁচাতে সাহায্য করে।

-         একমাত্র ব্যাকটেরিয়াই প্রকৃতি থেকে মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে।

-         পাট থেকে আঁশ ছাড়াতে ব্যাকটেরিয়ার সাহায্য নিতে হয়।

-         বিভিন্ন জীবন রক্ষাকারী এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হয়।

-         ব্যাকটেরিয়া জীন প্রকৌশলের মূল ভিত্তি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবের কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্য পাওয়ার জন্য জীনগত পরিবর্তনের কাজে ব্যাকটেরিয়াকে ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন: ছত্রাক কী?

উত্তর: ছত্রাক সমাঙ্গদেহী ক্লোরোফিলবিহীন অসবুজ উদ্ভিদ।

প্রশ্ন: ছত্রাক সালোকসংশ্লেষণ করতে পারে না কেন?

উত্তর: ক্লোরোফিলের অভাবে ছত্রাক সালোকসংশ্লেষণ করতে পারে না। তাই এরা পরভোজী অথবা মৃতভোজী।

প্রশ্ন: পরভোজী ছত্রাক কোথায় জন্মায়?

উত্তর: পরভোজী ছত্রাক বাসি ও পঁচা খাদ্য দ্রব্য, ফলমূল, শাকসবজি, ভেঁজা রুটি বা চামড়া, গোবর ইত্যাদিতে জন্মায়।

প্রশ্ন: মৃতভোজী ছত্রাক কোথায় জন্মায়?

উত্তর: মৃতভোজী ছত্রাক মৃত জীবদেহে বা জৈব পদার্থপূর্ণ মাটিতে জন্মায়।

প্রশ্ন: পেনিসিলিন ঔষধ তৈরিতে কি ব্যবহার করা হয়?  উত্তর: ছত্রাক।

প্রশ্ন: পাঁউরুটি তৈরিতে কোন ধরনের ছত্রাক ব্যবহৃত হয়?

উত্তর: ঈস্ট নামক ছত্রাক।

প্রশ্ন: ঈস্ট ছত্রাক ট্যাবলেট হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে কেন?

উত্তর: ভিটামিন সমৃদ্ধ বলে।

প্রশ্ন: সৌখিন খাদ্য বলে বিবেচিত হয় কোন ছত্রাক?

উত্তর: এগারিকাস নামক এক ধরনের মাশরুম সৌখিন খাদ্য বলে বিবেচিত।

প্রশ্ন: এগারিকাস ছত্রাক কোন দেশে চাষ করা হয়?

উত্তর: বর্তমানে আমাদের দেশসহ বহু দেশে চাষ করা হয়।

প্রশ্ন: আবর্জনা পঁচিয়ে মাটিতে মেশাতে কিসের ভূমিকা রয়েছে?

উত্তর: ছত্রাকের।

প্রশ্ন: ছত্রাক কিসের রোগ সৃষ্টি করে?

উত্তর: ছত্রাক মানুষ, জীবজন্তু ও উদ্ভিদের বহু রোগ সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন: দাদ, ছুলী (ছোলম) ও মানুষের শ্বাসনালির প্রদাহ কিসের সংক্রমণে হয়?

উত্তর: ছত্রাকের সংক্রমণে।

প্রশ্ন: ছত্রাক ফসলের কি কি রোগ সৃষ্টি করে?

উত্তর: ছত্রাক আলুর বিলম্বিত ধ্বসা রোগ, পাটের কালোপট্টি রোগ, আখের লাল পঁচা রোগ সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন: ছত্রাক আমাদের আসবাবপত্রের কি ক্ষতি করে?

উত্তর: ছত্রাক সহজেই কাঠ ও বেত বা বাঁশের আসবাবপত্র পঁচিয়ে আমাদের ক্ষতি করে।


প্রশ্ন: ছত্রাকজনিত রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে কি করতে হবে?

উত্তর: ছত্রাকজনিত রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে যা করা দরকার তা হলো:

-         ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র যেমন- কাপড়-চোপড়, চিরুনি, টুপি, স্যান্ডেল ইত্যাদি ব্যবহার না করা।

-         ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কম আসা।

-         ছত্রাক আক্রান্ত উদ্ভিদে ঔষধ ছিটানো বা উদ্ভিদ তুলে পুড়িয়ে ফেলা।

প্রশ্ন: শৈবাল কী?

উত্তর: শৈবাল হলো সমাঙ্গবর্গের ক্লোরোফিলযুক্ত ও স্ব-ভোজী উদ্ভিদ।

প্রশ্ন: শৈবাল কোথায় জন্মায়?

উত্তর: এরা মাটি, পানি ও অন্য গাছের উপর জন্মায়।

প্রশ্ন: সবুজ ছাড়া শৈবাল আর কি রঙের হয়?

উত্তর: সবুজ ছাড়াও লাল, বাদামি ইত্যাদি রঙের শৈবাল দেখা যায়।

প্রশ্ন: বেশিরভাগ জলাশয়ে কোন শৈবাল পাওয়া যায়?

উত্তর: ‘স্পাইরোগাইরা’ নামক শৈবাল বেশিরভাগ জলাশয়ে পাওয়া যায়।

প্রশ্ন: আইসক্রিম তৈরিতে ব্যবহৃত অ্যালজিন কি থেকে পাওয়া যায়?  উত্তর: সামুদ্রিক শৈবাল।

প্রশ্ন: আয়োডিন ও পটাশিয়ামের একটি ভালো উৎস কি?  উত্তর: সামুদ্রিক শৈবাল।

প্রশ্ন: মৎস চাষে শৈবালের ভূমিকা কী?

উত্তর: মৎস চাষে শৈবাল খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন: শৈবাল চা পাতার কি রোগ সৃষ্টি করে?

উত্তর: রেড রাস্ট রোগ।

প্রশ্ন: জলাশয়ে শৈবালের আধিক্য দেখা দিলে কি ঘটনা ঘটে?

উত্তর: জলজ প্রাণী ও মাছ অক্সিজেনের অভাবে মারা যেতে পারে।

প্রশ্ন: এককোষী প্রাণী অ্যামিবা কোন রাজ্যের সদস্য? উত্তর: প্রোটিস্টা।

প্রশ্ন: অ্যামিবা কী?

উত্তর: প্রোটিস্টা রাজ্যের সদস্য অ্যামিবা এককোষী প্রাণী। এদের দেহ ক্ষুদ্রাকার। অণুবীক্ষন যন্ত্র ছাড়া এদের দেখা যায় না। এরা প্রয়োজনে দেহের আকার পরিবর্তন করে থাকে।

প্রশ্ন: ক্ষণপদ কী?   উত্তর: অ্যামিবার দেহ থেকে তৈরি আঙ্গুলের মতো অভিক্ষেপকে ক্ষণপদ বলে।

প্রশ্ন: ক্ষণপদের কাজ কী?

উত্তর: ক্ষণপদের সাহায্যে অ্যামিবা খাদ্যগ্রহণ ও চলাচল করে।

প্রশ্ন: অ্যামিবার দেহে কী ধরনের গহ্বর থাকে?

উত্তর: অ্যামিবার দেহে পানিগহ্বর, খাদ্যগহ্বর ও সংকোচন গহ্বর থাকে।

প্রশ্ন: প্লাজমালেমা কী?

উত্তর: অ্যামিবার সারা দেহ একটি পাতলা ও স্বচ্ছ পর্দা দ্বারা ঘেরা থাকে। এ পর্দাকে প্লাজমালেমা বলা হয়।

প্রশ্ন: অ্যামিবা কোথায় জন্মে?

উত্তর: অ্যামিবা পানিতে, স্যাঁতস্যাঁতে মাটি এবং পুকুরের তলার পঁচা জৈব আবর্জনার মধ্যে জন্মে।

প্রশ্ন: আমাশয় রোগ কত ধরনের?

উত্তর: আমাশয় রোগ সাধারণত দুই ধরনের, যথা- এমিবিক ও ব্যাসিলারি।

প্রশ্ন: ব্যাসিলারি আমাশয়ের কারণ কী?   উত্তর: এক ধরনের ব্যাসিলাস ব্যাক্টেরিয়া।

প্রশ্ন: এমিবিক আমাশয় কেন হয়?

উত্তর: এন্টামিবা নামক এক ধরনের এককোষী প্রাণীর আক্রমণে এমিবিক আমাশয় হয়।

প্রশ্ন: এন্টামিবা কী?

উত্তর: এন্টামিবা প্রোটিস্টা রাজ্যভুক্ত এক ধরনের এককোষী জীব। খালি চোখে এদের দেখা যায় না। এদের দেহ স্বচ্ছ জেলির ন্যায়। এদের দেহের কোন নির্দিষ্ট আকৃতি নেই কারণ এরা সর্বদাই অ্যামিবার মতো আকার ও আকৃতি পরিবর্তন করতে থাকে।

প্রশ্ন: সিস্ট কী?

উত্তর: কখনো কখনো প্রতিকূল পরিবেশে অ্যামিবা গোলাকার শক্ত আবরণে নিজেদের দেহ ঢেকে ফেলে। এ অবস্থায় একে সিস্ট বলে।

প্রশ্ন: এন্টামিবা কোথায় বাস করে?

উত্তর: এন্টামিবা পরজীবী হিসেবে মানুষ, বানরজাতীয় প্রাণী, বিড়াল, কুকুর, শুকর ও ইদুঁরের বৃহদন্ত্রে বাস করে।

প্রশ্ন: এন্টামিবা কিভাবে বংশবৃদ্ধি করে?

উত্তর: এন্টামিবা কোষ বিভাজন ও অণুবীজ বা স্পোর সৃষ্টির মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে। স্পোরুলেশন পদ্ধতিতে একটি কোষের প্রোটোপ্লাজম বহুখণ্ডে বিভক্ত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণুবীজ বা স্পোর গঠন করে। অনুকূল পরিবেশে এরা প্রত্যেকে একটি নূতন অ্যামিবা হিসেবে বড় হয়।

প্রশ্ন: কোন ধরনের আমাশয় সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা খুব কঠিন?    উত্তর: এমিবিক আমাশয়।

প্রশ্ন: কিভাবে ব্যাকটেরিয়া জীবাণু দেহাভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হতে পারে?

উত্তর: ব্যাকটেরিয়া জীবাণু বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দেহাভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হতে পারে। যেমন-

-        অপরিষ্কার হাত জীবাণুর জন্য একটি সুবিধাজনক বাহন। যার মাধ্যমে সহজেই এরা মুখগহ্বরে ঢুকে যেতে পারে।

-        আমরা যে জামা কাপড় ব্যবহার করি তাতে লেগে ব্যাকটেরিয়ার স্পোর স্থানান্তরিত হতে পারে।

-        বাতাসে যে ধুলাবালি উড়ে বেড়ায় তার সাথে অতি সহজেই ব্যাকটেরিয়া বা তার স্পোর এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে।

-        হাত মেলানোর মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া একজন থেকে অন্যজনে অতি সহজে স্থানান্তরিত হতে পারে।

-        পঁচা ও বাসি খাদ্যের মাধ্যমে জীবাণু সহজেই ছড়ায়।

প্রশ্ন: কলেরা ও টাইফয়েড কি জনিত রোগ?   উত্তর: ব্যাকটেরিয়া।

 

প্রশ্ন: ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও এন্টামিবাজনিত রোগ এক সময় খুবই ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে যেত কেন?

উত্তর: নিরাপদ পানির অভাবে।

প্রশ্ন: যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করলে কী সমস্যা হয়?

উত্তর: যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের কারণে জনস্বাস্থ্যজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব মলমূত্রে যে জীবাণু থাকে তা ভক্ষণকারী অন্য জীব এগুলোকে ছড়িয়ে দেয়। এছাড়া বৃষ্টি বা জোয়ারের পানিতে এগুলো দূর দুরান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রশ্ন: আমাদের দেশে কিভাবে এন্টামিবা সংক্রমিত হয়?

উত্তর: আমাদের দেশের অনেক স্থানে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নেই এবং এসব অঞ্চলে মানুষ মাঠ বা কাঁচা পায়খানা ব্যবহার করে। এন্টামিবায় আক্রান্ত ব্যক্তির মল মাঠের মাটিতে মিশে যায়। এ মাটি হাতে লাগলে বা এ মাটিতে যে সবজি চাষ করা হয় তাতে এসব জীবাণু লেগে থাকে। সবজির ভিতরের এরা প্রবেশ করে। রান্নার পরও দেখা যায় ঐ জীবাণু তখনও বেঁচে আছে। এভাবে এন্টামিবা সংক্রমিত হয়।

প্রশ্ন: সর্দি কাশির ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়?

উত্তর: হাঁচি, কফ, থুতু ও কাশির মাধ্যমে সর্দি কাশির ভাইরাস ছড়ায়।

প্রশ্ন: উদ্ভিদের মোজাইক রোগ কিভাবে ছড়ায়?

উত্তর: সংস্পর্শ দ্বারা উদ্ভিদের মোজাইক রোগ ছড়ায়।

প্রশ্ন: কোন রোগ একবার হলে আর নিরাময় হয় না?  উত্তর: এইড্স।

প্রশ্ন: এইড্স রোগ কিভাবে ছড়ায়?

উত্তর: অসুস্থ লোকের রক্ত গ্রহণ, মাদক গ্রহণ, এক সূঁই এ বহু লোকের ইনজেকশান গ্রহণ ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে এইড্স রোগ ছড়ায়।

প্রশ্ন: মাম্পস, হাম, বসন্ত ইত্যাদি কিসের মাধ্যমে ছড়ায়?

উত্তর: ভাইরাসজনিত এসব রোগ বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় এবং আমাদের শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে। এভাবে নানা মাধ্যমে ভাইরাস সুস্থ দেহে প্রবেশ করে।