প্রোটিন বা আমিষ


@@@ প্রোটিন শব্দটি প্রথম প্রয়োগ করেন কে?
(ক) সোয়ান (খ) মুলার (গ) মুল্ডার (গ) সিকেভিজ উত্তর: (গ)
ব্যাখ্যা:  গ্রিক ‘Proteios’ হতে প্রোটিন শব্দের উৎপত্তি। Proteios অর্থ হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন জীবদেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জৈব রাসায়নিক পদার্থ। বিভিন্ন অ্যামিনো অ্যাসিড বিভিন্নভাবে শৃঙ্খলিত হয়ে এক একটি প্রোটিন গঠন করে। প্রোটিন শব্দটি প্রথম প্রয়োগ করেন জি. মুল্ডার ১৮৩৯ সালে।
@@@ অ্যামিনো অ্যাসিডের পলিমারকে কি বলে?
(ক) কার্বোহাইড্রেট (খ) লিপিড (গ) প্রোটিন (ঘ) ভিটামিন উত্তর: (গ)
ব্যাখ্যা: প্রোটিন হলো অসংখ্য অ্যামিনো অ্যাসিড সমন্বয়ে গঠিত বৃহদাকার যৌগিক জৈব অণু। অন্যভাবে বলা যায়, প্রোটিন হলো উচ্চ আণবিক ওজনবিশিষ্ট বৃহৎ অণুর জৈব রাসায়নিক পদার্থ যা হাইড্রোলাইসিস প্রক্রিয়ায় অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপন্ন করে। অর্থাৎ অ্যামিনো অ্যাসিডের পলিমারকে প্রোটিন বা আমিষ বলে। একটি কোষের অভ্যন্তরে সারাক্ষণ শত শত প্রকার প্রোটিন তৈরি হয়।
@@@ এনজাইম, অ্যান্টিবডি, হরমোন এগুলো-
(ক) প্রোটিন (খ) লিপিড (গ) কার্বোহাইড্রেট (ঘ) লিপো-প্রোটিন উত্তর: (ক)
ব্যাখ্যা: জীবদেহের প্রায় সর্বত্র প্রোটিন বিরাজমান। জীবদেহের সব অঙ্গে গাঠনিক বস্তু হিসেবে প্রোটিন বিদ্যমান। জৈব-ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী এনজাইম, অ্যান্টিবডি, হরমোন এগুলোও প্রোটিন। সব এনজাইম প্রোটিন কিন্তু সব প্রোটিন এনজাইম নয়।
@@@ প্রোটিন কি ধরনের যৌগ?
(ক) পলিস্যাকারাইড (খ) পলিপেপটাইড (গ) পলিগ্লিসারাইড (ঘ) অলিপোপেপটাইড উত্তর: (খ)
ব্যাখ্যা: বিভিন্ন অ্যামিনো অ্যাসিড বিভিন্নভাবে শৃঙ্খলিত হয়ে এক একটি প্রোটিন গঠন করে। একটি অ্যামিনো অ্যাসিডের কার্বোক্সিল গ্রুপ অপর একটি অ্যামিনো অ্যাসিডের আলফা-অ্যামাইনো গ্রুপের সাথে যুক্ত হয়ে যে অ্যামাইড বন্ড গঠন করে তাকে পেপটাইড বন্ড বলে। বিভিন্ন অ্যামিনো অ্যাসিডের প্রায় ৫০টি অণু পেপটাইড বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পলিপেপটাইড সৃষ্টি করে। প্রোটিন হলো পলিপেপটাইড যৌগ।
@@@ একটি জীবদেহে কত ধরনের প্রোটিন থাকে?
(ক) দুই (খ) দশ (গ) একশ (ঘ) অসংখ্য উত্তর: (ঘ)
ব্যাখ্যা: প্রতিটি জীবদেহে অসংখ্য ধরনের প্রোটিন থাকে। একটি জীবদেহে যতটি জিনের প্রকাশ ঘটে ঐ দেহে তত ধরনের প্রোটিন থাকে।
@@@ কোষে প্রোটিন সংশ্লেষণ স্থান কোনটি?
(ক) রাইবোসোম (খ) লাইসোসোম (গ) মাইটোকন্ড্রিয়া (ঘ) ক্লোরোপ্লাস্ট উত্তর: (ক)
@@@ প্রোটিনের বৈশিষ্ট সম্পর্কে নিচের কোন বৈশিষ্টটি সঠিক নয়?
(ক) প্রোটিন কলয়েড প্রকৃতির, অধিকাংশ কেলাসিত।
(খ) প্রোটিনকে অ্যাসিড, ক্ষার ও এনজাইম সহযোগে আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে অ্যামিনো অ্যাসিড পাওয়া যায়।
(গ) বহুবিধ ভৌত ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রোটিনের প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটানো যায়।
(ঘ) প্রোটিন পানিতে, লঘু অ্যাসিডে, ক্ষার ও মৃদু লবণের দ্রবণে অদ্রবণীয় কিন্তু অ্যালকোহলে দ্রবণীয়। উত্তর: (ঘ)
ব্যাখ্যা: প্রোটিন পানিতে, লঘু অ্যাসিডে, ক্ষার ও মৃদু লবণের দ্রবণে দ্রবণীয় কিন্তু অ্যালকোহলে অদ্রবণীয়।
@@@ নিচের কোন বৈশিষ্ট্যটি প্রোটিনের?
(ক) এটি কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন দিয়ে গঠিত। এছাড়াও এতে সালফার, আয়রন ও তামা থাকতে পারে।
(খ) অ্যাসিড প্রয়োগ করলে প্রোটিন তঞ্চিত (জমাট বাঁধা) হয়। এতে আণবিক গঠন পরিবর্তিত হয়।
(গ) প্রোটিন সাধারণত তড়িৎধর্মী ও বাফার দ্রবণ হিসেবে কাজ করে। (ঘ) উপরের সবগুলো উত্তর: (ঘ)
@@@ প্রোটিনের মনোমার অ্যামিনো অ্যাসিডে ক্ষারীয় গ্রুপ (-NH2 এবং অম্লীয় গ্রুপ (-COOH) থাকে বলে এটি একই সাথে ক্ষারীয় ও অম্লীয় উভয় গুণ প্রকাশ করে। এজন্য একে ......................................... প্রোটিন বলে।
(ক) অ্যাম্ফোটেরিক (amphoteric) (খ) অ্যালোস্টেরিক (গ) অ্যাকটিভ (ঘ) ক অথবা খ উত্তর: (ক)
@@@ প্রোটিনের কাজ কোনটি? 
(ক) জীবদেহের গাঠনিক উপাদান হিসেবে কাজ করে।
(খ) কোষে প্রোটিন সঞ্চিত খাদ্য হিসেবে কাজ করে এবং প্রয়োজনে শক্তি উৎপাদন করে।
(গ) বিভিন্ন অঙ্গাণু এবং কোষ ঝিল্লি গঠনে কাজ করে।
(ঘ) ক,খ,গ উত্তর: (ঘ)
@@@ এনজাইম হিসেবে জীবদেহের ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে তথা জীবদেহকে সচল রাখে-
(ক) কার্বোহাইড্রেট (খ) লিপিড (গ) প্রোটিন (ঘ) উপরের সবগুলো উত্তর: (গ)
@@@ কোনটি প্রোটিনের কাজ?
(ক) এন্টিবডির গাঠনিক উপাদান হিসেবে দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে এবং দেহকে রোগমুক্ত রাখে।
(খ) জীবদেহের প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপন্ন করে।
(গ) হিস্টোন প্রোটিন নিউক্লিয়াস এবং নিউক্লিক অ্যাসিডকে কার্যকর করে।
(ঘ) উপরের সবগুলো উত্তর: (ঘ)
@@@ প্রোটিন নিচের কোন কাজটি করে?
(ক) যে সকল উদ্ভিদে বিষাক্ত প্রোটিন থাকে তারা অনেক পশু পাখির আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়।
(খ) হিমোগ্লোবিন প্রোটিন প্রাণিদেহের সমস্ত কোষে অক্সিজেন ও কার্বনডাইঅক্সাইড পরিবহন করে।
(গ) মানবদেহের পেপটাইড থেকে উৎপাদিত প্রোটিন ডিফেনসিভ এন্টিবডি হিসেবে কাজ করে।
(ঘ) ক,খ,গ উত্তর: (ঘ)
@@@ কোনটির আক্রমণ হলে কোষে ইন্টারফেরন তৈরি হয়?
(ক) ভাইরাস (খ) ব্যাকটেরিয়া (গ) ছত্রাক (ঘ) মাইকোপ্লাজমা উত্তর: (ক)
ব্যাখা: ইন্টারফেরন একটি কোষীয় প্রোটিন। এটি ভাইরাস আক্রমণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেহে তৈরি হয়। ধারণা করা হচ্ছে ইন্টারফেরন ক্যান্সার ও ভাইরাসজনিত রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা যাবে।
@@@ কত প্রকার অ্যামিনো অ্যাসিড দিয়ে প্রোটিন তৈরি হয়?
(ক) দশ (খ) বিশ (গ) ত্রিশ (ঘ) চল্লিশ উত্তর: (খ)
ব্যাখ্যা: প্রোটিন তৈরি হয় বিশ প্রকার অ্যামিনো অ্যাসিড দিয়ে। গাঠনিক ইউনিট হিসেবে এই বিশ প্রকার অ্যামিনো অ্যাসিডই অত্যাবশ্যকীয়।
@@@ মানবদেহের চাহিদা অনুসারে কতটি অ্যামিনো অ্যাসিড অত্যাবশ্যকীয়?
(ক) ৬টি (খ) ৮টি (গ) ১০ টি (ঘ) ১২টি উত্তর: (খ)
ব্যাখ্যা: মাত্র আটটি অ্যামিনো অ্যাসিড (লিউসিন, আইসোলিউসিন, লাইসিন, মেথিওনিন, থিওনিন, ভ্যালিন, ফিনাইল অ্যালানিন এবং ট্রিপ্টোফেন) কে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড বলা হয়। এর কারণ হলো অন্য ১২টি অ্যামিনো অ্যাসিড আমাদের দেহাভ্যন্তরে সংশ্লেষিত হতে পারে কিন্তু উক্ত ৮টি অ্যামিনো অ্যাসিড দেহাভ্যন্তরে সংশ্লেষিত হয়না, খাদ্যের মাধ্যমে দেহে গ্রহণ করা হয়।
@@@ শিশুদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের সংখ্যা কতটি?
(ক) ৬টি (খ) ৮টি (গ) ১০ টি (ঘ) ১২টি উত্তর: (গ)
@@@ শিশুদের জন্য কোন অ্যামিনো এসিডটি অত্যাবশ্যকীয়?
(ক) আরজিনিন (খ) হিস্টিডিন (গ) গ্লুটামিক এসিড (ঘ) ক ও খ উত্তর: (ঘ)
@@@ প্রোটিনের জন্য খাদ্য তালিকায় কোনটির প্রাধান্য দেয়া উচিত?
(ক) মাছ (খ) ডাল (গ) মাংস (ঘ) ক ও গ উত্তর: (ঘ)
ব্যাখ্যা: সব প্রোটিনে সব অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে না, তাই যে সব প্রোটিনে সবকটি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে খাদ্য তালিকায় সেগুলোই প্রাধান্য দেয়া উচিত। এদিক থেকে প্রাণিজ প্রোটিনই (মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদি) অগ্রগামী (উৎকৃষ্ট) এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিন (যেমন-ডাল) অনুগামী।
@@@ আদর্শ প্রোটিন কোনটিতে পাওয়া যায়?
(ক) ডিম (খ) দুধ (গ) ডাল (ঘ) ডিম ও দুধ উত্তর: (ঘ)
ব্যাখ্যা: ডিম এবং দুধ আদর্শ প্রোটিন। মাছ-মাংস প্রকৃত আদর্শ প্রোটিন নয়। ডালের প্রোটিন আরো নিম্নমানের।