ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং ভিটামিন সি সম্পর্কে কিছু প্রশ্নোত্তর

 প্রশ্ন: ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স কী? ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এর কাজ লিখ।

উত্তর: ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স:

= ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স হলো পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন বি গোত্রের কয়েকটি ভিটামিনের সমষ্টি। 

= ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এর কাজ হলো বিশেষ বিশেষ উৎসেচকের অংশ হিসেবে আমিষ, শর্করা ও স্নেহ পদার্থকে বিশ্লিষ্ট করা এবং অন্তর্নিহিত শক্তিকে মুক্ত হতে সাহায্য করা।

ভিটামিন বি১ (থায়ামিন): এর প্রধান কাজ হলো- শর্করা বিপাকে অংশগ্রহণ করে শক্তিমুক্ত করা। তাছাড়া স্বাভাবিক ক্ষুধা বজায় রাখতে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে।

ভিটামিন বি২ (রিবোফ্লাবিন): অ্যামাইনো এসিড, ফ্যাটি এসিড ও কার্বহাইড্রেটের বিপাকে অংশ নিয়ে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।

ভিটামিন বি৬ (পাইরিডক্সিন): শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।

ভিটামিন বি১২ (সায়ানোকোবালামিন): লোহিত রক্তকণিকা বৃদ্ধি ও উৎপাদনে সহায়তা করে। শ্বেত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

প্রশ্ন: ভিটামিন সি সম্পর্কে লিখ। ভিটামিন সি এর কাজ কী?

উত্তর: ভিটামিন ‘সি’:

= দেহের জন্য ভিটামিন ‘সি’ অতি প্রয়োজনীয় উপাদান।

= ভিটামিন সি পানিতে দ্রবীভূত হয় এবং সামান্য তাপেই নষ্ট হয়ে যায়।

= ভিটামিন সি দেহে জমা থাকে না তাই প্রতিদিন খাওয়া দরকার।

= টক জাতীয় ফল আমলকী, আনারস, পেয়ারা, কমলালেবু, লেবু, আমড়া ইত্যাদি ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে।

= সবুজ শাকসবজি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, লেটুসপাতা থেকে আমরা ভিটামিন সি পাই।

= পাকা ফল অপেক্ষা কাঁচা সবজি ও ফলে ভিটামিন সি বেশি থাকে।

কাজ: 

= ভিটামিন সি পেশি ও দাঁত মজবুত করে।

= ক্ষত নিরাময় ও চর্মরোগ রোধে সহায়তা করে।

= কণ্ঠনালি ও নাকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

প্রশ্ন: ভিটামিন সি এর অভাবে কী হয়?

উত্তর: ভিটামিন সি এর অভাবজনিত রোগ:

প্রাপ্ত বয়স্কদের দেহে ভিটামিন ‘সি’ এর অভাব প্রকট হলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়:

= হাড়ের গঠন শক্ত ও মজবুত হতে পারে না।

= হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।

= ত্বক খসখসে হয়, চুলকায়, ত্বকে ঘা হলে সহজে শুকাতে চায় না।

প্রশ্ন: স্কার্ভি রোগ কেন হয়? স্কার্ভি রোগের লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে লিখ।

উত্তর: স্কার্ভি:  ভিটামিন সি এর অভাবে স্কার্ভি রোগ হয়। শিশু ও বয়স্কদের এ রোগ বেশি হয়। এ রোগে-

- দাঁতের মাড়ি ফুলে নরম হয়ে যায়।

- দাঁতের গোড়া আলগা হয়ে যায় এবং গোড়া থেকে রক্ত পড়ে।

- দাঁতের এনামেল উঠে যায়। এতে অকালে দাঁত পড়ে যেতে পারে।

- গ্রন্থি ফুলে যায় এবং মুখে ব্যথা হয়।

- রক্তক্ষরণ সহজে বন্ধ হয় না, ঘা শুকাতে দেরি হয়।

-অন্যান্য রোগ বিশেষ করে সর্দি, কাশি খুব সহজে আক্রমণ করে।

প্রতিকার: এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

প্রতিরোধ: কোলের শিশুকে মায়ের দুধের সঙ্গে অন্যান্য পরিপূরক খাদ্য যেমন ফলের রস, সবজির সুপ ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।