ভাইরাস ।। জীব ও জড়ের সেতুবন্ধন


ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যসমূহকে জড়-রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য এবং জীবীয় বৈশিষ্ট্য এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

ভাইরাসের জড়-রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

ভাইরাসের দেহ কোন কোষ দ্বারা গঠিত নয়। অর্থাৎ এরা অকোষীয়।

এদের নেই সাইটোপ্লাজম। নেই কোষঝিল্লি। নেই কোষপ্রাচীর, রাইবোসোম, আর কোষের শক্তিঘর মাইটোকন্ড্রিয়া। 

এদের নেই কোন পুষ্টি ক্রিয়া কারণ এদের নেই কোনো বিপাকীয় এনজাইম। 

ভাইরাসের নেই স্বাধীন প্রজনন ক্ষমতা। এদের প্রজননের জন্য প্রয়োজন জীবকোষ।

রাসায়নিক কণা যেমন জীবকোষের বাইরে ভাইরাসও তেমন।

ভাইরাসের নেই কোন দৈহিক বৃদ্ধি আরা তারা সাড়া দেয় না কোনো পরিবেশের উদ্দীপনায়।

ব্যাকটেরিয়ারোধক ফিল্টারে ভাইরাসকে ফিল্টার করা যায় না।

ভাইরাসকে কেলাসিত, সেন্ট্রিফিউজ, পানির সাথে মিশিয়ে সাসপেনশন, তলানিকরণ, আর ব্যাপন করা যায়।

ভাইরাস রাসায়নিকভাবে প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিডের সমাহার ছাড়া আর কিছুই নয়।


ভাইরাসের জীবীয় বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

পোষক কোষ পেলে ভাইরাস সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে।

একটি ভাইরাস তার মতই ভাইরাস জন্ম দিতে পারে আর নতুন সৃষ্ট ভাইরাসে বজায় থাকে মাতৃ ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য।

ডিএনএ বা আরএনএ এবং প্রোটিন দিয়ে ভাইরাসের দেহ গঠিত।

সুনির্দিষ্টভাবে বাধ্যতামূলক পরজীবী যাদের রয়েছে অভিযোজন ক্ষমতা।

ভাইরাস ঘটাতে পারে পরিব্যক্তি এবং তৈরি করতে সক্ষম প্রকরণ।


নোট: 

পরিব্যক্তি: কোন জীবের জিনোম অর্থাৎ জেনেটিক বস্তুর গুণগত ও পরিমাণগত যেকোনো ধরনের আকস্মিক পরিবর্তন যা বংশানুসরণ যোগ্য তাকে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি বলে।


প্রাণ-রসায়নবিদগণ ভাইরাসের জড়-বৈশিষ্ট্যসমূহকে প্রাধান্য দেন, অন্যদিকে অণুজীব বিজ্ঞানিগণ ভাইরাসের জীব-বৈশিষ্ট্যসমূহকে প্রাধান্য দেন। এ কারণে ভাইরাসকে জীব ও জড়ের সেতুবন্ধন বলা হয়।