উদ্ভিদের তো কোন কঙ্কাল নেই। তাহলে, উদ্ভিদের ভার বহনের দায়িত্ব পালন করে কে? উত্তর হলো সেলুলোজ।
সেলুলোজ কি?
আসলে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি যে পদার্থটি পাওয়া যায় তা হলো সেলুলোজ। উদ্ভিদের যে কোষপ্রাচীর থাকে (যা প্রাণীদের থাকে না) তা সেলুলোজ দ্বারা গঠিত। অর্থাৎ উদ্ভিদের যে প্রধান গাঠনিক পদার্থ রয়েছে তার অন্যতম হলো সেলুলোজ।
সেলুলোজ কেমন?
সেলুলোজ হলো কঠিন জৈব রাসায়নিক পদার্থ। রং সাদা। এদের স্বাদ বা গন্ধ কিছুই নেই। পানিতেও দ্রবীভূত হয়না। অবিজারক এই পদার্থের আণবিক ভর হতে পারে ২লক্ষ থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ পর্যন্ত। ফাইবারের মতো এই পদার্থ শক্ত হয় অনেক। আয়োডিন দ্রবণ প্রয়োগ করে পাওয়া যায়না এর কোন রং।
কোথায় কি পরিমাণে থাকে সেলুলোজ?
তুলায় সেলুলোজ থাকে অনেক, প্রায় ৯৪%। লিনেনে পাওয়া যায় ৯০% আর ৬০% পাওয়া যায় কাঠে। তৃণলতায় ৩০-৪০% সেলুলোজ থাকে। জৈব বস্তুতে ভরপুর যে মাটি তাতে সেলুলোজ থাকে ৪০-৭০%।
মানুষ কি সেলুলোজ হজম করতে পারে?
উত্তর হচ্ছে না, পারে না। কারণ, মানুষের পরিপাকনালীতে সেলুলোজ হজমের প্রধান এনজাইম সেলুলেজ থাকে না। তবে, গরু-ছাগল সেলুলোজ হজম করতে পারে কেননা তাদের পরিপাকতন্ত্রে সেলুলেজ এনজাইম রয়েছে।
সেলুলোজ কী কী কাজে লাগে?
- তন্তু তৈরিতে লাগে। আমরা জানি, তন্তু হলো বস্ত্রশিল্পের প্রধান কাঁচামাল।
- সেলুলোজ ব্যবহার করা হয় নাইট্রেট বিস্ফোরক হিসেবে।
- অ্যাসিটেট ফটোগ্রাফিক ফিল্মে ব্যবহৃত হয় এটি।
- সেলুলোজ দিয়ে তৈরি হয় ফটোগ্রাফিক ফিল্ম, টিস্যু পেপার, ফিল্টার পেপার আর প্যাকেজিং এর দ্রব্যসামগ্রী।
- নির্মাণ সামগ্রী এবং আসবাবপত্র তৈরি করলে সেলুলোজই প্রধান উপাদান হিসেবে যান্ত্রিক সাহায্য প্রদান করে।
- সেলুলোজ ব্যবহার করা হয় স্টেশনারি ফেজ হিসেবে থিন লেয়ার ক্রোমাটোগ্রাফিতে।
- বর্তমানে ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক থেকে সেলুলোজ উৎপাদন করা হয়। এই সেলুলোজ ব্যবহার করা হয় বায়োটেকনোলজিতে।
Comments
Post a Comment